আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর ফোন পেয়ে সেদিন সেনাপ্রধান সফিউল্লাহ প্রতিরোধ করলে এ হত্যাযজ্ঞ হত না। সোমবার দুপুরে গোপালগঞ্জে এক সভায় একথা বলেন তিনি।সদরের শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের কনফারেন্স রুমে চক্ষু স্বাস্থ্য পরিচর্যা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি বিষয়ে এই সভার আয়োজন করা হয়।এতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শেখ সেলিম বলেন, ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল সফিউল্লাহকে ফোন করেছিলেন। তিনিসহ সিনিয়র আর্মি অফিসাররা প্রতিরোধ করলে সেদিন এমন নৃশংস হত্যাযজ্ঞ হত না।তিনি বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ফারুক-রশিদসহ বিপথগামী কয়েকজন জুনিয়র অফিসার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছিল। কিন্তু এর নেপথ্যে কারা ছিল- তা জাতি আজ জানতে চায়।শেখ সেলিম অভিযোগ করে বলেন, বিপথগামী সেনাবাহিনীর ওইসব কর্মকর্তা ও সৈনিকরা প্রথমে শেখ মনি ও আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাড়িতে হামলা করে হত্যাযজ্ঞ চালায়। এ খবর পাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু টেলিফোনে তৎকালীন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল সফিউল্লাহকে বিষয়টি জানান। এছাড়া ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে হামলা করা হতে পারে বলেও তিনি তার আশংকার কথা সফিউল্লাহকে বলেন। প্রতিউত্তরে সেনাপ্রধান সফিউল্লাহ বঙ্গবন্ধুকে বাড়ি থেকে সরে যেতে বলেছিলেন। এরপর ভোর ৬টার দিকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে হামলা চালিয়ে স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়।
শেখ সেলিম প্রশ্ন রেখে বলেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সুযোগ পেয়েও বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলো না। অথচ একটি স্বাধীন দেশে সেনাবাহিনীর কতিপয় জুনিয়র অফিসার ও শতাধিক সাধারণ সৈনিক মিলে বাঙালি জাতির পিতাকে হত্যা করল?
সেদিন যদি সেনাবাহিনীর সিনিয়র কর্মকর্তারা প্রতিরোধ গড়ে তুলতেন তাহলে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারতো না।
মৃত্যুর মুখে থেকেও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাত থেকে বাঁচার জন্য বঙ্গবন্ধু পালালেন না। অথচ যে দেশের মানুষের মুক্তির জন্য যিনি অজীবন লড়াই করলেন, ইতিহাসে একটি জাতির জম্ম দিলেন, সেই দেশের জাতির পিতা কাপুরুষের মতো তার দেশের কতিপয় বিপথগামী সেনাবাহিনীর অফিসারের হাত থেকে বাঁচতে তিনি পালিয়ে যাবেন! এমন প্রশ্ন রাখেন শেখ সেলিম।কেবল ফারুক-রশিদই নয়; বঙ্গবন্ধুকে হত্যার নেপথ্যে কারা ছিল আজ তা প্রমাণের সময় এসেছে। ওইদিন সেনাপ্রধান সফিউল্লাহ, জিয়াসহ সিনিয়র অফিসাররা কী করছিলেন তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। এজন্য তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানান আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা।
হাসপাতালের পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফর রহমান বাচ্চু প্রমুখ।
