বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তা সঠিক ও যথার্থ। এই দুঃশাসনের মধ্যেও তারা যতটুকু পেরেছে, নির্ভুল প্রতিবেদন দেয়ার চেষ্টা করেছে। কিছুদিন আরো গভীরভাবে গেলে আরো তথ্য পেতেন। আমরা বলতে চাই, সরকারের বিষাক্ত থাবার কাছে প্রকৃত অনাচার তুলে ধরা মুশকিল। প্রকৃত অবস্থা আরো ভয়াবহ, আরো ভয়ঙ্কর।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, আমি বলি, আপনি সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে (তিনমাস নিখোঁজ থাকা) জিজ্ঞাসা করুন, তথ্য-উপাত্ত পাবেন, আপনি মীর কাশেম আলীর ছেলেকে জিজ্ঞাসা করুন, আপনি তথ্য-উপাত্ত পাবেন, আপনি কয়েকদিন আগে ঘটে যাওয়া ফরহাদ মজহারের পরিবারকে জিজ্ঞাসা করুন, তথ্য উপাত্ত পাবেন। আমি কতো তালিকা বলব। আপনি (ওবায়দুল কাদের) কী একবার ইলিয়াস আলীর পরিবারকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন যে, গুম কারা করেছে, আপনি চৌধুরী আলমের পরিবারকে একবার জিজ্ঞাসা করুন- গুম কারা করেছে। আপনি বাস ড্রাইভার, সিএনজি চালক, রিকসাওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করুন এই যে গুম-অপহরণ, বন্দুকযুদ্ধ, হত্যা এসব কারা করছে, কে করছে?
তিনি বলেন, যারা মিথ্যার মধ্যে বসবাস করেন, তাদের আর সত্য বলে কি লাভ? অবশ্য ওবায়দুল কাদের সাহেব সূর্য রশ্মিবিধৌত চশমা পরেন, সানগ্লাস পরেন। এই সানগ্লাস পরার কারণে হয়ত পরিষ্কারভাবে দেশে কি ঘটছে, না ঘটছে দেখতে পারেন না। শুধু তাই নয়, আপনাদের কান বন্ধ হয়ে গেছে, তুলা দিয়েছেন। তথ্য-উপাত্ত আপনাদের কান দিয়ে প্রবেশ করে না। সরকারের দেয়া তথ্য-উপাত্ত জনগণ বিশ্বাস করে না বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভি আরো বলেন, আপনাদের তথ্য-উপাত্ত দেশের মানুষকে বিশ্বাস করতে হবে- এক ধরনের বিকারগ্রস্থ অবস্থা আপনাদের পেয়ে গেছে। আপনাদের পরিসংখ্যান ব্যুরোর যে পরিসংখ্যান তা আপনাদের নিজস্ব বানানো, সেই পরিসংখ্যান মানুষ বিশ্বাস করে না।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবের ঈদ শেষে ঢাকায় ফেরার পথে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়া প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, আমরা যখন ঈদের প্রাক্কালে আগে-পরে বললাম, সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে ১‘শর উপরে লোক দুর্ঘটনায় মারা গেলো। আপনি (ওবায়দুল কাদের) অস্বীকার করলেন অবলীলায়। তারপরও ওয়ায়দুল কাদের লেন যে, শান্তিতে ও স্বস্তিতে আমরা ঈদ পার করেছি।
রিজভী বলেন, সুইস ব্যাংকের টাকার যে প্রতিবেদন বেরুলো। ২০১২ সালের পর থেকে দুই গুন-তিন গুন করে সুইস ব্যাংকে টাকা বাড়তে শুরু করেছে। সোনালী ব্যাংক লুট, রুপালী ব্যাংক লুট, বেসিক ব্যাংক লুট, শেয়ার বাজার লুট-এই লুটের টাকাগুলো সুইস ব্যাংকে ঢুকেছে। এটা সবাই জানে, সবাই বুঝতে পারে।
গাজীপুরের নির্বাচিত মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানকে ফের বরখাস্ত করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।
