বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি গত ৮ বছরে ৮ দিনও আন্দোলন করতে পারেনি। তারা ঈদের পরে আন্দোলনের কথা বলেছিল। ৮ বছরে ১৭টা ঈদ চলে গেল। এবারও ঈদের পর ১৪ দিন পার হয়ে গেল। তারা শুধু বলে এইদিন না ওইদিন। এই ঈদ না ওই ঈদ। এবারও আষাঢ় মাসে আন্দোলনের তর্জন-গর্জন সার হলো। আসলে বিএনপির রাজনীতি চোরাবালিতে আটকে আছে। তারা যা করছে তা শুধু ব্যর্থতার কান্নাকাটি।
বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফখরুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনি তো শুধুই কাঁদেন। তবে ভালোও তো আছেন। চোরাগুপ্তা এক হামলা হয়েছে। কিন্তু আহত হননি। অথচ ২০০১ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত আমাদের কর্মীদের রক্তাক্ত করা হয়েছে। আব্দুস সামাদ আজাদ, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, আব্দুর রহমানকে রক্তাক্ত করা হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বরিশাল, খুলনা, কলারোয়া, ঈশ্বরদীতে যেতে দেয়া হয়নি। শাহ কিবরিয়া, মঞ্জুরুল ইমাম, সাংবাদিক শামসুর রহমান, মানিক সাহা, হুমায়ুন কবীর বালুর রক্তে রক্তের নদী বইয়ে দেয়া হয়েছিল। ২১ হাজার কর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। কাঁদতে কাঁদতে বাংলাদেশ অশ্রু দরিয়া হয়ে গিয়েছিল। তাদের প্রাইম টার্গেট ছিল শেখ হাসিনা। আমি নিজে আজও নামাজে সেজদা দিতে পারি না। হাজার হাজার কর্মী শরীরে স্প্রিন্টার নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। আর আজ আপনি কাঁদছেন! এটা তো কান্না না- মায়াকান্না! রাজনীতির কুম্ভীরাশ্রু!
আজ সোমবার ঈদগাহ ময়দানে যশোর জেলা ছাত্রলীগের ১৭তম সম্মেলনে তিনি প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন। তিনি বলেন, শ্লোগান আর ভাষণের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। এখন দরকার ‘পজেটিভ একশন।’ কথা কম, কাজ বেশি। ভাষণ কম, একশন বেশি। এটাই হলো ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ আমাদের সাগরের উত্তাল তরঙ্গমালা। মনে রাখতে হবে বঙ্গবন্ধু আমাদের রাজনীতির রোল মডেল। শেখ হাসিনা উন্নয়নের রোল মডেল। আর সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশের রোল মডেল।
তিনি ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ফার্স্ট টাইম ভোটারকে ফোকাস করতে হবে। তরুণদের পাশাপাশি নারী ভোটারদের ফোকাস করতে হবে। ছাত্রলীগকে নৌকার পক্ষে কাজ করতে হবে। কোনো বিশেষ ব্যক্তির পক্ষে ঝুঁকে পড়লে চলবে না।
মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে কারা ছাত্রলীগকে দেখাশুনা করে রাখে, সে খবর আমাদের আছে। নেত্রী বিভিন্ন জরিপ করছেন। তৃণমূলের মতামত নিয়ে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে। যাদের ইমেজ ড্যামেজ হয়ে গেছে, তারা উইনেবল ক্যান্ডিডেট না। জনগণের কাছে যারা গ্রহণযোগ্য হবে, মনোনয়ন বোর্ড তাদেরই বেছে নেবে। ছাত্রলীগ কর্মীরা জরিপে তাদের মতামত দিতে পারবে।
মন্ত্রী বলেন, ছাত্রলীগের কমিটিতে যেন অছাত্ররা না থাকে, মাদকাসক্ত, স্বাধীনতা-চেতনাবিরোধীরা যেন নেতা হয়ে না যায়, সে খেয়াল রাখতে হবে। নেতাদের বয়স ২৯ বছরের মধ্যে হতে হবে। মনে রাখতে হবে ছাত্রলীগের স্বকীয়তা-নিজস্বতা আছে। ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধু-শেখ হাসিনা ছাড়া কারও পাহারাদার হতে পারবে না। তিনি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যশোরে বসেই কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইদুর রহমান সোহাগ সম্মেলন উদ্বোধন করেন। জেলা ছাত্রলীগের বিদায়ী সভাপতি আরিফুল ইসলাম রিয়াদের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহমান এমপি, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারি সাইফুজ্জামান শিখর, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন বক্তব্য রাখেন। স্বপন ভট্রাচার্য্য এমপি, রণজিৎ রায় এমপি, কাজী নাবিল এমপি, কাজী নাবিল এমপি, শেখ আফিল এমপি, মনিরুল ইসলাম এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
