বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের একটি গ্রামে মাত্র তিন দিনের ভেতর অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে নয়টি শিশু মারা গেছে।
ঐ একই রোগে আক্রান্ত আরও ৪৬ টি শিশুকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৩টি শিশুর অবস্থাকে চিকিৎসকরা গুরুতর বলে বর্ণনা করছেন।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, তারা এখনো পর্যন্ত এই রোগ সম্পর্কে কোনও পরিষ্কার ধারণা করতে পারছেন না।
সে কারণেই আক্রান্ত এলাকার সমস্ত মানুষ এবং শিশুকে আপাতত ঘরে থাকতে বলা হয়েছে, যাতে এটি আরও ছড়িয়ে পড়তে না পারে।
সীতাকুন্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের আক্রান্ত ত্রিপুরা গ্রামটি দেখতে গিয়েছিলেন সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী।
সেখান থেকে ফেরার পথে টেলিফোনে তিনি বিবিসি-র মোয়াজ্জেম হাসানকে জানান সীতাকুন্ডের যে এলাকায় রোগটি হানা দিয়েছে সেটি খুব দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকা, গাড়ি থেকে নেমে অন্তত দেড়-দুমাইল হেঁটে ওই ত্রিপুরাপাড়ায় পৌঁছতে হয়।
বুধবার সকালে ওই এলাকায় শিশুদের মৃত্যুর খবর পেয়ে তারা তড়িঘড়ি সে দিকে রওনা দেন। তারা সেখানে পৌঁছে দেখেন গত তিনদিনে ওই গ্রামে নটি শিশু মারা গেছে, আক্রান্ত হয়েছে আরও অনেকে।
এই অজানা রোগটিতে প্রথম জ্বর ও গায়ে র্যাশ হয়। তারপর অনেক ক্ষেত্রে বাচ্চারা কাশি, শ্বাসকষ্ট বা নিউমোনিয়ার মতো উপসর্গে ভুগে মারা গেছে।অনেক ক্ষেত্রে রক্ত পায়খানা বা বমিও হয়েছে। কেউ কেউ আবার মারা যাওয়ার আগে প্রবল খিঁচুনিতেও আক্রান্ত হয়েছে।
তবে আক্রান্তদের সবার বয়সই দশ থেকে কুড়ির মধ্যে। প্রাপ্তবয়স্করা কেউ এখনও এ রোগে আক্রান্ত হননি।
রোগটির আসল পরিচয় সম্বন্ধে নিশ্চিত হতে না-পেরে ঢাকায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে আপাতত এটিকে ‘অজ্ঞাত রোগ’ হিসেবে চিহ্নিত করারই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী আরও জানিয়েছেন, রোগটি যে এলাকায় হানা দিয়েছে সেখানে শিক্ষার প্রসার কম। স্থানীয় লোকরা বাইরের দুনিয়ার সঙ্গেও খুব একটা মেলামেশা করেন না।
এই কারণেই এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার খবর তাদের কানে আসতে দেরি হয়েছে বলে তিনি জানাচ্ছেন।
আক্রান্ত শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যাপারেও তাদের বাবা-মাদের অনীহা ছিল।
তবে কর্মকর্তারা তাদের অনেক বুঝিয়ে শেষ পর্যন্ত ভর্তি করানোর ব্যাপারে রাজি করিয়েছেন।
