বংশাই নদীতে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালি উত্তোলন করে ট্রলার দিয়ে নেয়ার সময় ট্রলারের ধাক্কায় বিজ্রের পিলারের অংশ ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ট্রলারের ধাক্কায় পিলার ভেঙ্গে যাওয়ায় প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব একাব্বর হোসেন ৩ শ’ মিটার ব্রিজ হুমকির মুখে পড়েছে।বালি ভর্তি দু’টি ট্রলার ব্রিজের নিচে আটকে ও দু’টি ট্রলার ডুবে গেছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ত্রিমোহন বংশাই এলাকার নদীতে এ ঘটনা ঘটেছে।
ব্রিজের পিলারের অংশ ভেঙ্গে যাওয়ায় শতশ ত লোক ঘটনা দেখার জন্য ভিড় করেছে।
মির্জাপুর উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অফিস সূত্র জানায়, বংশাই নদীর ত্রিমোহন এলাকায় একটি পাকা ব্রিজ নির্মাণে এলাকাবাসীর দাবি ছিল দীর্ঘ দিনের। এলাকায় পাকা ব্রিজ না হওয়ায় ১০ মিনিটের পথ পাড়ি দিয়ে এলাকাবাসিকে ৩০ কিমি ঘুরে লতিফপুর, তরফপুর, বাঁশতৈল, আজগানা ইউনিয়ন এবং পাশ্ববর্তী বাসাইল ও সখীপুর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত করতে হতো।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্জ একাব্বর হোসেন এমপির উদ্যোগে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের আর্থিক সহযোগিতায় বংশাই নদীর উপর প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩ শ’ মিটার ব্রিজ নির্মাণ হয়। ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন এবং সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন এমপি ব্রিজটির উদ্বোধন করেন।
এদিকে ব্রিজটির উদ্বোধনের পর থেকেই বংশাই নদী ও ব্রিজের আশপাশ থেকে একটি প্রভাবশালী মহল ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করায় ব্রিজটি হুমকির মুখে পড়ে বলে এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ্য লোকজন অভিযোগ করেন। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে দেলোয়ার হোসেন, আলমগীর মিয়া, সুলতানারা বেগম অভিযোগ করেন,প্রভাবশালীদের মধ্যে রজ্জব মৃধা, বাবুল সিকদার, পাকা বাবুল সিকদার, আবু সাইদ, হুমায়ুন, শহীদ মৃধা, মিনহাজ ও সুলতান মিয়াসহ তাদের সহযোগি রয়েছে।অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ফলে ফতেপুর, চাকলেশ্বর, গোড়াইল, গাড়াইল, ত্রিমোহন, পুষ্টকামুরী, বান্দরমারাসহ ১৫-২০টি গ্রাম হুমকির মুখে পড়েছে।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার বালি ভতি ট্রলার দিয়ে বালি নেওয়ার সময় প্রবল স্রোতের মধ্যে ট্রলারটি ব্রিজের পিলারের মধ্যে ধাক্কা লাগে। এতে বিজ্রের পিলারের দুটি অংশ ভেঙ্গে দুটি ট্রলার ডুবে যায় এবং দুটি ট্রলার আটকে পরে। ব্রিজটির পিলার ভেঙ্গে পরে যেকোনো সময় যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করছে এলাকাবাসী।
মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশল অফিসের সহকারী প্রকৌশলী মো. ফিরোজ রেজা সাংবাদিকদের বলেন, ব্রিজের নিচ দিয়ে অবৈধভাবে বালি ভর্তি ট্রলার নেওয়ার ফলে দুটি পিলারের অংশ ভেঙ্গে গেছে। পিলারের অংশ ভেঙ্গে যাওয়ায় ব্রিজের পিয়ারিং প্যাড, গার্ডার ও স্লাব, ভ্যাটিকাল কলামের রড় ও সিমেন্ট বের হয়ে অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরেছে।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলী (ইঞ্জিনিয়ার) মো. আরিফুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলে বলেন, ব্রিজের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সংবাদ পেয়ে একজন সহকারী প্রকৌশলীকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শক্রমে তদন্ত সাপেক্ষে আইনুনোগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
