প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা (পিইসি) তুলে দিলে অর্ধেক শিক্ষার্থী ঝরে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের ধরে রাখতেই এ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এটা আলাদা কোনো পরীক্ষা নয়। আগেও প্রাথমিক ও ৮ম শ্রেণিতে পরীক্ষা হতো, এখনো সেইভাবেই পরীক্ষা নেয়া হয়।বৃহষ্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম মিলনের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যারা প্রাথমিক বা ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে বন্ধ করে দেয়। তাদের জন্যই এই পিইসি এবং জেএসসি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা। প্রাথমিক ও ৮ম শ্রেণিতে একটি সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্যই অনেকে পড়তে আসে। তাই গ্রামে এটার সুনাম রয়েছে। আমাদের শিক্ষার্থী ঝরে পড়া কমেছে।
সংরক্ষিত আসনের ফজিলাতুন্নেসার সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অবৈধ কোচিং ও গাইড বই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষকেরা হচ্ছেন মূল নিয়ামক। তাদের ছাড়া কোনো কাজে সফল হওয়া যাবে না। কিন্তু অনেক শিক্ষক এমন কাজ করছেন তাতে শিক্ষক সমাজের মান মর্যাদা নেমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অনেক শিক্ষক ক্লাসে পড়ান না। প্রাইভেটে পড়ান। এটা বন্ধ করতে হবে।নাহিদ বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে সব ব্যবস্থা নিয়েছেন তারা। কিন্তু অনেক জায়গায় পরীক্ষার দিন ভোরে প্রশ্নপত্র পাঠাতে হয়। শিক্ষকেরা ভোরবেলা প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দেন। এ ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপযুক্ত আইন নেই। আইন তৈরির কাজ চলছে। শিগগির এ সংক্রান্ত আইন হবে।বিরোধী দলের সদস্য এ কে এম মাঈদুল ইসলাম শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে গিয়ে বলেন, আপনি কারিগরি শিক্ষার চেয়ে কেরানি তৈরির শিক্ষায় জোর দিয়েছেন। এতে বেকার তৈরির কারখানা হচ্ছে। এই শিক্ষা নিয়ে ছেলে মেয়েরা কিছুই করতে পারবে না। সমস্যা তৈরি হবে। সুতরাং কারিগরি শিক্ষা চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে কি না?জবাবে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ কারিগরি শিক্ষা নিয়ে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ২০২০ সাল নাগাদ কারিগরি শিক্ষায় ২০ শতাংশ এনরোলমেন্টের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিপ্লোমা কোর্সে আসনসংখ্যা ২৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫৭ হাজার ৭৮০তে উন্নীত করা হয়েছে।২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে বেসরকারি কলেজগুলোতে সরকার অনুমোদিত ভর্তি ও সেশন ফি আদায় করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কতৃক ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এই নীতিমালার উনুচ্ছেদ -৫.০ এ বর্ণিত নির্দেশনা অনুযায়ী সরকার অনুমোদিত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষার্থীদের নিকট হতে ভর্তি ও সেশন ফি আদায় করা হচ্ছে।
