ওপার থেকে পানি আসছে প্রবল বেগে, বাড়ছে বন্যার ব্যাপকতা। ইতোমধ্যে ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা অববাহিকার কয়েকটি নদীর পানি উপচে প্লাবিত হয়ে গেছে অনেক এলাকা। সামনের কয়েকদিন বন্যার ব্যাপকতা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে উজান থেকে থেকে বৃষ্টির পানি নামতে শুরু করায়। গত সপ্তাহে মওসুমী বায়ু বাংলাদেশ ও আশপাশের অঞ্চলগুলোতে মোটামোটি সক্রিয় ছিল। ফলে গত এক সপ্তাহে তেমন বৃষ্টিপাত না হলেও আসাম ও মেঘালয়ের পাহাড়িয়া অঞ্চলের জমে থাকা পানি ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে। পাহাড়িয়া অঞ্চলের সম্মিলিত পানি ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, সুরমা, কুশিয়ারা ও অন্যান্য নদী দিয়ে প্রবল বেগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশে। গঙ্গা দিয়েও আসছে প্রচুর পানি কিন্তু গঙ্গা-পদ্মার পানি এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ডালিয়ায় তিস্তা, গাইবান্ধায় ঘাগট, চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি, সিরাজগঞ্জ, ধলেশ্বরী এলাসিনে, সুরমা কানাইঘাটে, অমলশীদ ও শেওলায় কুশিয়ারা, জারিয়া জাঞ্জাইলে কংস নদী।
এসব নদীতে পানি বিপৎসীমার চার থেকে ৮০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ নদীগুলোতে আজও পানি বেড়েছে সর্বোচ্চ ৫২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত। অপেক্ষাকৃত উজানের দিকে অবস্থিত ব্রহ্মপুত্র নদী পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। ব্রহ্মপুত্রের সাথে সংযুক্ত যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি আরো দুই দিন বৃদ্ধি পেতে পারে। ব্রহ্মপুত্রের পানিটাই যমুনা নদীতে গিয়ে পড়ে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, যমুনা নদীর পানি আগামীকাল মঙ্গলবার স্থিতিশীল থাকলেও বুধবার থেকে তা বাড়তে পারে। অপরদিকে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি আরো দুদিন বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
পানি বিশেষজ্ঞ ড. এস আই খান জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা দিয়ে প্রচুর পানি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আসাম ও মেঘালয়ের পাহাড়িয়া অঞ্চলের পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করতে কিছু দিন লেগে যায়। মাঝখানে বর্ষণ কিছুটা হ্রাস পেলেও কয়েকদিন আগে যে ভারী বর্ষণ হয়েছে সে পানিটাই এখন আসছে। আসামে ইতোমধ্যে ভারী বর্ষণের ফলে বন্যা দেখা দিয়েছে। সে পানি ধীরে ধীরে ব্রহ্মপুত্রসহ বেশ কয়েকটি নদী দিয়ে বাংলাদেশের প্রবেশ করবে। এ কারণে সামনের কয়েকদিন ব্রহ্মপুত্র ও এর সাথে যুক্ত যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বেশ কয়েকদিন বাংলাদেশের ওপর মওসুমী বায়ু মোটামোটি সক্রিয় থাকার পর তা আরো শক্তিশালী হয়েছে। আরো দুদিন মওসুমী বায়ুর এ অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে। ফলে আগামী ২/৩ দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।