২১ দফা দাবি আদায় না হলে আগামী ২৪ জুলাই থেকে নৌযান শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন শুরু করবেন। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ কর্মবিরতির কথা জানায় বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম বলেন, আমরা জরুরিভাবে সমাধানের জন্য ২১টি বিষয় চিহ্নিত করে নৌপরিবহন অধিদফতর এবং প্রধানমন্ত্রীসহ সকল মন্ত্রণালয় ও দফতরসমূহ এবং প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকেই অবহিত করেছি। গত ৯ জুলাই জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে এবং ১২ জুলাই সরাসরি প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে আমাদের আকুতি জানিয়েছি।
তিনি বলেন, আমাদের বিশ্বাস আগামী ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বন্ধ জ্বালানি তৈলবাহী জাহাজ চালু ও শ্রমিকদের সমস্যার সমাধান, ভারতের কারাগারে অন্তরীণ আট নৌযান শ্রমিক ও বাংলাদেশের কারাগার অন্তরীণ আট নাবিকের মুক্তিসহ ২১ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান। হুঁশিয়ারি দিয়ে এই শ্রমিক নেতা বলেন, যদি সমাধান না হয় তাহলে ২৩ জুলাই মধ্যরাত ১২টা ১ মিনিট অর্থাত্ ২৪ জুলাই থেকে তৈলবাহী, পণ্যবাহী, বালুবাহী, যাত্রীবাহীসহ এক কথায় সকল ধরনের ব্যক্তি মালিকানাধীন নৌযানের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালনের মাধ্যমে দাবি প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে অগ্রসর করতে বাধ্য হবে। যার জন্য নৌযান শ্রমিকদেরকে কোনোভাবেই দায়ী করা চলবে না।
ভারতে কীভাবে আটজন বন্দি হয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের প্রটোকল চুক্তির অধীনে তিন শতাধিক নৌযান ভারত-বাংলাদেশের ভিতর চলাচলা করে। এ ছাড়া ট্রান্সশিপমেন্ট এবং বন্দর থেকে বন্দরে কন্টেইনার প্রটোকল চুক্তিও সম্পাদন হয়েছে। বাংলাদেশের যে জাহাজগুলো ভারতে যায়, তার কোনোটিতেই ফ্রিজ নাই। তাই দৈনন্দিন বাজার করতে নামতে হয়। চিকিত্সা অন্যান্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে জাহাজ থেকে নামতে হয়।
তিনি বলেন, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বা এজেন্টরা পর্যাপ্ত ল্যান্ডিং পাশের ব্যবস্থা করে না। আবার যে সমস্ত কাগজপত্র বাংলাদেশ থেকে দেওয়া হয় সেগুলো ভারতের পুলিশ বিবেচনা করে না। কিন্তু বাস্তব প্রয়োজনে নামতে হয়, নামেও। হঠাত্ হঠাত্ অজ্ঞাত কারণে পুলিশ এদের আটকায় আবার তদবির করলে কাউকে কাউকে ছেড়ে দেয়। চলতি বছরের ২২ মার্চ পশ্চিম বাংলার হলদিয়া পোর্ট সংলগ্ন দুর্বাচক থানাধীন এলাকায় স্থানীয় বাজার আকাশগঙ্গা কমপ্লেক্সে কেনাকাটা করে ফেরার সময় টহল পুলিশ অজ্ঞাত ফোন কল পেয়ে আটজন শ্রমিককে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করে। এ ব্যাপারে আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানালেও এখনো পর্যন্ত সকল কারাবন্দি নৌ-শ্রমিকদের মুক্তির ব্যবস্থা হয়নি।
