রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ঢাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণে একটি আধুনিক ও সুদূর প্রসারী মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে।রবিবার দুপুরে গুলশান সেন্টার পয়েন্টে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে তৃতীয় আন্ত:বিভাগীয় সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হকের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ঢাকা ১১-এর সংসদ সদস্য এ কে এম রহমত উল্লাহ। এছাড়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সচিব, দপ্তর ও সংস্থা প্রধান, নগর বিশেষজ্ঞ ও সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ঢাকা মহানগরীতে গত ৫০ থেকে ৬০ বছরে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগি দেশি-বিদেশি সংস্থার মতে এ নগরীতে সর্বোচ্চ ১ কোটি ৭০ লাখ জনসংখ্যা থাকতে পারে। কিন্তু বাস্তবে জনসংখ্যা প্রায় ৩ কোটি। তাছাড়া সিটির আয়তনও প্রায় ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সকল কারণে নগরীর ভৌত কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে বলেই জলাবদ্ধতাসহ নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
তিনি বলেন,এ সমস্যা নিরসনে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। স্বল্প মেয়াদী ব্যবস্থা চালু রেখে দীর্ঘ মেয়াদী ব্যবস্থা হিসেবে ঢাকা মহানগরের জন্য আধুনিক ড্রেনেজ ও সুয়ারেজ মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন করা হবে।খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ঢাকা শহরের এ জলজট বা জলাবদ্ধতার জন্য আমরা সবাই কম-বেশি দায়ী। মহানগরীর অধিবাসী, জন প্রতিনিধি, সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সমন্বিতভাবে এ সমস্যা সমাধানে কাজ করতে হবে।তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরীর আরেকটি বড় সমস্যা পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। ঢাকা ওয়াসার ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল না থেকে প্রতিটি বাড়ীতে সেপটিক ট্যাংক বসানো উচিৎ। সেপটিক ট্যাংকে প্রাকৃতিক উপায়ে মানব বর্জ্য সংরক্ষিত থাকে যা অত্যন্ত নিরাপদ। তিনি এ ব্যাপারে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মন্ত্রী বলেন, কঠিন বর্জ্য ঢাকা মহানগরীর অন্যতম বড় সমস্যা। যেখানে-সেখানে কঠিন বর্জ্য ফেলার বিষয়টি জলাবদ্ধতাকে বাড়িয়ে দেয়। ড্রেন, খাল সব কিছু এ কঠিন বর্জ্য দ্বারা ভরাট হয়ে পানি প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করে।তিনি আরো বলেন, গৃহস্থালীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে ধ্বংস না করা গেলে জলাবদ্ধতা ঠেকানো যাবে না। এজন্য জলজট নিরসনে লিড এজেন্সি হিসেবে সিটি কর্পোরেশনকে ভূমিকা নেওয়ার নির্দেশনা দেন মন্ত্রী।
তিনি এ বিষয়ে বিভিন্ন সংস্থা ও দপ্তরের পাশাপাশি স্থানীয় জন প্রতিনিধি, সিটি কাউন্সিলরদের ও অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
সভায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, যেসব খাল ভরাট হয়ে গেছে সেগুলো পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে হবে ও বেদখল খালসমূহ পুনরুদ্ধার করতে হবে।
পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।সভায় ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতা ও তার সমাধানে নগর পরিকল্পনাবিদ, অধ্যাপক, গবেষক, সিটি কাউন্সিলর, বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও দপ্তর প্রতিনিধিগণ পরামর্শ প্রদান করেন।
