গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে এম এ মান্নানকে তৃতীয়বারের মতো বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশ আপিলেও বহাল রয়েছে।ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ রোববার ‘নো অর্ডার’ দিয়েছে।এর ফলে বিএনপি নেতা মান্নানের গাজীপুরের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে যেতে আইনগত আর কোনো বাধা থাকলো না বলে তার আইনজীবীরা দাবি করছেন।আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আর মান্নানের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও অ্যাডভোকেট আবু হানিফ।
গত ৯ জুলাই সরকারের বরখাস্তের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে মান্নানের রিট আবেদন শুনে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের বেঞ্চ রোববার ওই আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন।সেই সঙ্গে মেয়র মান্নানকে বরখাস্তের আদেশ কেন ‘অবৈধ’ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।স্থানীয় সরকার সচিব, উপসচিব, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার, গাজিপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, গাজীপুরের ডেপুটি কমিশনার, পুলিশ সুপারকে রুলে বিবাদী করা হয়।হাই কোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে পরদিনই রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার আদালতে গেলে বিষয়টি নিয়মিত আপিল শুনানির জন্য পাঠানো হয়। সেই আবেদন নিষ্পত্তি করে আজ রোববার ‘নো অর্ডার’ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।আইনি লড়াই চালিয়ে মেয়র পদে ফেরার পর এক মাস না গড়াতেই গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার বিভাগ মান্নানকে বরখাস্তের আদেশ দেয়।সেখানে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের এক মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হওয়ায় আইন অনুযায়ী এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।সাময়িক বরখাস্তের ওই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে রোববার সকালে রিট আবেদন করেন মেয়র মান্নান।প্যানেল মেয়রকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি না করার নির্দেশনা চাওয়া হয় সেখানে।বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মান্নান ২০১৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীকে হারিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন। কিন্তু এরপর নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি তিনি।
এর আগে আরও দুই দফা সরকার তাকে বরখাস্ত করলেও প্রতিবারই তিনি উচ্চ আদালতের রায়ে মেয়রের চেয়ারে ফিরেছেন। নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তাকে কয়েক দফায় কারাগারেও থাকতে হয়েছে বেশ কিছু দিন।বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, বিরোধী দল থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব পালন করতে না দেওয়ার উদ্দেশ্যেই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার মান্নানকে বরখাস্ত করছে।প্রসঙ্গত, অধ্যাপক এমএ মান্নান ২০১৩ সালের ৬ জুলাই প্রথম মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর গত চার বছরে তিনবার বরখাস্ত এবং ২২ মাস করাভোগ করেছেন। তিনি দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়েছেন ১৮ মাস ১৯ দিন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মোট ৩০টি মামলা দায়ের হয়েছে।
