বহুল আলোচিত পুরান ঢাকার দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতের দেওয়া সাজা বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।এর আগে এ মামলার রায়ে ছাত্রলীগের আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ঢাকার একটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।নিম্ন আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স) ও আসামিদের করা আপিলের শুনানি শেষে গত ১৭ জুলাই রায় ঘোষণার এ দিন ঠিক করে দেয় আদালত।চার বছর আগে আলোচিত এ মামলার রায়ে ছাত্রলীগের আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় ঢাকার একটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হয় গত ১৬ মে।১৫ কার্য দিবস শুনানি শেষে গত ১৭ জুলাই হাইকোর্ট রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।এদিকে নৃশংস ওই হত্যাকাণ্ডের পর সাড়ে চার বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি রাজন তালুকদার ও মীর মো. নূরে আলম লিমনসহ ১৪ আসামিকে।অভিযোগ রয়েছে, পলাতকরা সাজা পরোয়ানা নিয়ে দেশ ও বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু তাদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এই মামলায় পাঁচজন মৃত্যুদণ্ড ও দুজন যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কারাগারে রয়েছেন।প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের সময় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ভেবে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে ছাত্রলীগের একদল কর্মী বিশ্বজিতকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে।নিরীহ ওই যুবককে দিন-দুপুরে নৃশংসভাবে হত্যার দৃশ্য টেলিভিশনে দেখে আঁতকে উঠেছিল দেশের জনগণ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১৩ সালের মার্চ মাসে আদালতে এই হত্যা মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ২১ নেতা-কর্মীকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।ওই বছরের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক নিজামুল হক আটজনকে ফাঁসি ও ১৩ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রফিকুল ইসলাম ওরফে চাপাতি শাকিল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, ইমদাদুল হক এমদাদ, জিএম রাশেদুজ্জামান শাওন, সাইফুল ইসলাম, কাইয়ুম মিয়া টিপু, রাজন তালুকদার (পলাতক) ও মীর মো. নূরে আলম লিমন (পলাতক)।যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে এএইচএম কিবরিয়া ও গোলাম মোস্তফা গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন।পলাতকরা হলেন- খন্দকার ইউনুছ আলী, তারিক বিন জোহর ওরফে তমাল, আলাউদ্দিন, ওবায়দুল কাদের তাহসিন, ইমরান হোসেন, আজিজুর রহমান, আল আমিন, রফিকুল ইসলাম, মনিরুল হক পাভেল, কামরুল হাসান ও মোশারফ হোসেন।
রায়ের পর বিচারিক আদালতের ফাঁসির রায় অনুমোদনের জন্য নথি ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্ত কারাবন্দি আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। পেপারবুক প্রস্তুতের পর গত ১৬ মে থেকে ওই ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়। দীর্ঘ ১৫ কার্য দিবস শুনানি শেষে আজ রায় হচ্ছে।
