সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর পূর্ণাঙ্গ রায় নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এক অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় আইনমন্ত্রী ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের কপি নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত ঘটান। দুই ঘণ্টাব্যাপী এটা নিয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়।সচিবালয়ের কেবিনেট কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ছাড়াও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।এদিকে পূর্ণাঙ্গ এই রায় নিয়ে জনসম্মুখে কথা বলে রায়ের বিষয়ে জনমত গড়ে তোলার জন্য মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পূর্ণাঙ্গ রায়ের বিষয়ে মন্ত্রীরা বলেন, সংসদ যদি ‘ইমম্যাচিউর্ড’ হয় তাহলে রাষ্ট্রপতিও ‘ইমম্যাচিউর্ড।’ আর রাষ্ট্রপতি যে প্রধান বিচারপতিকে শপথবাক্য পাঠ করিয়ে প্রধান বিচারপতি করেছেন তিনি কি ইমম্যাচিউর্ড হতে পারেন। মন্ত্রিপরিষদের একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখে আপিল বিভাগের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় গত ১ আগস্ট প্রকাশিত হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধানটি তুলে দিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ৯৬ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন এনে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেয়া হয়, যেটি ১৯৭২ সালের সংবিধানে ছিল।সংবিধানে এই সংশোধনী হওয়ায় মৌল কাঠামোতে পরিবর্তন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করবে- এমন যুক্তিতে ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। ওই রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর রুল জারি করেন। গত বছরের ১০ মার্চ মামলাটির চূড়ান্ত শুনানি শেষে ৫ মে তা অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন আদালত।
