চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশের প্রত্যন্ত পার্বত্য অঞ্চলে ৭ দশমিক শূন্য মাত্রার ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে আটজন পর্যটক রয়েছে। মঙ্গলবার রাতের এই ভূমিকম্পে আরো ২৪৭ জন আহত হয়েছে বলে বুধবার জানিয়েছে প্রাদেশিক সরকার ও দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। এদিকে দুর্গত এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণকাজে সহায়তার জন্য সামরিক বাহিনী পাঠানো হয়েছে।
সিচুয়ানের ভূমিকম্প প্রশাসন ও যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ভূমিকম্পটির মাত্রা ৭ দশমিক শূন্য বলে নিশ্চিত করেছে। বুধবার ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি পরাঘাত অনুভূত হয়। ইউএসজিএস এর তথ্য মতে, সিচুয়ানের গুয়ানগিয়ুয়ান শহর থেকে ২০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে জনবিরল এলাকায় ভূ-পৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি।
সিচুয়ানের ভূমিকম্প প্রশাসন জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উপকেন্দ্রটি ছিল নগাওয়া এলাকায়। এলাকাটিতে প্রধানত তিব্বতীয় নৃগোষ্ঠীর বসবাস, এদের অনেকে যাযাবর পশুপালক। এলাকাটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য জুঝাইগু সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চলের নিকটবর্তী। ভূমিকম্পের পর ভূমিধসে জুঝাইগুতে ১শ পর্যটক আটকা পড়েছে বলে জানিয়েছে সিচুয়ানের প্রাদেশিক সরকার। সরকারি বার্তা সংস্থা চায়না নিউজ সার্ভিস জানিয়েছে, তাদের মধ্যে আট পর্যটক নিহত হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া প্রাদেশিক সরকারের বরাতে মোট ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে। ভূমিকম্প কবলিত এলাকাটি থেকে প্রায় ৩১ হাজার ৫শ পর্যটককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভূমিকম্পে সিচুয়ানের পেট্রল স্টেশনগুলো এবং তেল সংরক্ষণাগারের কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছে সিনোপেক। সিচুয়ান ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, একটি আবাসিক হোটেলের অভ্যর্থনা অংশ ধসে পড়ে কিছু লোক আটকা পড়লেও ভবনটি থেকে দুই হাজার ৮শ লোককে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জুঝাইগুতে নিহত পর্যটকদের জাতীয়তা সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি, কিন্তু এলাকাটি বিদেশি পর্যটকদের চেয়ে চীনা পর্যটকদের কাছেই বেশি জনপ্রিয়। বর্তমানে জুঝাইগুতে ৩৮ হাজারেরও বেশি পর্যটক ভ্রমণে আছে বলে নিজেদের একটি দাপ্তরিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছে সিচুয়ান সরকার। চীনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন, প্রাদেশিক রাজধানী চেংদু ছাড়াও আরও দূরের শিয়ানেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্প দূর্গত এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ ফের সচল হয়েছে এবং উদ্ধার ও ত্রাণকাজে সহায়তার জন্য সামরিক বাহিনী পাঠানো হয়েছে। জুঝাইগু বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় আছে এবং রানওয়েগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। রয়টার্স।
