ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির নামোল্লেখ না করে তাকে ‘স্বেচ্ছাচারী’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। একইসঙ্গে ১৫ আগস্টের পর সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনকে ‘কাপুরুষ’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
সোমবার দুপুরে খাদ্য ভবনে জাতীয় শোক দিবসের এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির নামোল্লেখ না করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘নানান দিক দিয়ে হুঙ্কার আসছে। বেশ শক্তমত হুঙ্কার, কিন্তু হুঙ্কার যিনি দেন তিনি কে? আমি বলবো আমাদের শিল্পমন্ত্রীর ভাষায়, যে সংসদ রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন করে সেই রাষ্ট্রপতি কর্তৃক উনি নির্বাচিত। আর উনি সংসদের উপর ছড়ি ঘুরাতে আসেন। আর তার একাডেমিক দিকটার কথা আমি বলতে চাই না। সাংবাদিক সাহেবরা তার একাডেমিক দিকটা খুঁজে বের করুন। যাই হোক ‘তিন সেরে পাত্রে পাঁচ সেরে জিনিস’ দিলে যা হয় বর্তমান ঘটনা তাই হয়েছে। তিন সেরে পাত্রে পাঁচ সেরে জিনিস দিলে সেটা মানিয়ে উঠতে পারে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘তিনি (প্রধান বিচারপতি) শেখ হাসিনা আর রাষ্ট্রপতির উদারতার সুযোগ নিয়ে একটা জায়গায় বসছেন। সেখানে উনি প্রথমে কি করলেন আপনারা কি দেখেন নাই। উনি প্রধান বিচারপতির চেয়ারে বসার পরেই উনার মানসীর মূর্তি (ভাস্কর্য) বানিয়ে ঠিক বাংলাদেশের মানচিত্রটা ঢেকে দেয়ার জন্য তা সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে স্থাপন করলেন। তাকে কয়েক দফা বুঝিয়ে সেই মূর্তি নামানো হল। তা না হলে ‘রায়ট’ হয়ে যেত। তিনি তার স্বেচ্ছাচারিতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। তবে একটি কথা বলে দিতে চাই- সরকারের উদারতাকে দুর্বলতা ভাবলে বড় ভুল করবেন।’
মতিয়া চৌধুরী বলেন, এক-এগারোর সময়ে যেমন রাজনীতিবিদ, জাতীয় সংসদকে হেয় করা হয়েছিল, ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের পর্যবেক্ষণেও তা-ই করা হয়েছে। ফলে এক-এগারোর কুশীলবরা আবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। শুধু তাই নয়, আদালতের কাঁধে ভর করে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে চায়। সোজা পথে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে পারবে না জেনেই বিএনপি ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসতে চায়। কিন্তু ষড়যন্ত্রে কাজ হবে না।
ড. কামাল হোসেন সম্পর্কে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন সত্যিকারের একজন ‘কাপুরুষ’। তিনি কথায় কথায় আইনের শাসনের কথা বলেন, কিন্তু যখন ১৫ আগস্টের খুনিদের দায়মুক্তি দেয়া হল তখন কোথায় ছিল তার আইনের শাসন?’তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে ড. কামাল হোসেনের ইহুদি জামাতা ডেভিড বার্গমান সাংবাদিকতার ভিসা নিয়ে এসে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে নির্লজ্জ দালালি শুরু করলেন। অথচ সেই কামাল হোসেন এখন আমাদের নীতিবাক্য শুনান।’খাদ্য সচিব মো. কায়কোবাদ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাড. কামরুল ইসলাম, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এমপি, খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. বদরুল হাসান প্রমুখ।
