মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচাঘাট পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদী তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে ভাঙন এবং প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমিসহ নতুন নতুন এলাকা। রাস্তাঘাট ভেঙে ও ডুবে গিয়ে এসব এলাকার হাজারো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। বাড়িঘর ডুবে নিম্নাঞ্চলের বিশুদ্ধ পানির অভাবে পড়েছে অনেক পরিবার। স্থানীয় কৃষকেরা ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। অথচ এসব এলাকার দুর্গতদের জন্য সরকারিভাবে কোনো ত্রাণ আসেনি বলেও জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
নদী তীরবর্তী এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জানান, গত ক’দিনে যমুনায় পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে এর শাখা নদী ইছামতি, কালিগঙ্গা, ধলেশ্বরীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারী, বাঁচামারা, বাঘুটিয়া, জিয়নপুর ও খলসী ইউনিয়নের ইসলামপুর, বাসাইল, মুন্সিকান্দি, জোতকাশি, বেপারীপাড়া, ফকিরপাড়া, রাহাতপুর, চুয়াডাঙ্গা, হাজিপাড়া, কাচারীপাড়া, উত্তরখণ্ড, অহেল আলীর পাড়া, গোবিন্দপুর, নকের আলী মাদবরপাড়া, বাঘপাড়া, মণ্ডলপাড়া, বড়টিয়া, আমতলী, কাটাখালি ও বৈন্যা এলাকায় কম-বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে। শাখা নদী তীরবর্তী শ্রীধরনগর, কুস্তা, ঘিওর, মাইলাগি, জাবরা, তরা, বেউথা, নয়াকান্দিসহ প্রভৃতি নতুন নতুন এলাকাও পড়েছে ভাঙনের মুখে। অনেক স্থানে বাঁধ ভেঙে নদী তীরবর্তী এলাকাসমূহে পানি ঢুকে পড়েছে। নিম্নাঞ্চলের অনেক বাড়ি-ঘর ইতোমধ্যেই ডুবে গেছে। ফসল ক্ষেতও প্লাবিত হয়েছে।
শিবালয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার (জিআর) মো. ফারুক হোসেন জানান, যমুনা নদীর এ পয়েন্টে গত কয়েকদিন ধরে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল সোমবার সকাল নয়টা পর্যন্ত বিপত্সীমা (৯.৪০ মিটার) এক সেন্টিমিটার নিচে ছিল। এর পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি তিন ঘণ্টা পর পর এই পয়েন্টে পানি স্তর পরিমাপ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
মানিকগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আলিমুজ্জামান মিয়া জানান, বর্ষার পানি এমনিতেই জমির উর্বরা শক্তি বাড়ায়। এই পানি ফসলি জমিতে আসায় পাটের জন্য ভালো হয়েছে। তবে, এই পানিতে রোরো-আমন ধান, রোপার বীজতলা ও শাকসবজি’র জমি ডুবে গেছে। এগুলোর পরিমাণ নির্ণয় করা হচ্ছে। এক সপ্তাহের বেশি এসব ফসল পানিতে ডুবে থাকলে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
