পশ্চিম হিমালয়ের লাদাখ অঞ্চলে ভারত ও চীনের বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় দুদেশের সেনাদের মধ্যে হাতাহাতি ও পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ঘটেছে বলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গেছে।লাদাখের প্যাংগং লেকের ধারে যখন এ ঘটনা ঘটল, তখন হিমালয়েরই আরও পূর্ব দিকে ভারত, ভুটান ও চীনের সীমানা যেখানে মিশেছে সেই ডোকলাম উপত্যকায় গত দুমাস ধরে ভারত ও চীনের মধ্যে তীব্র সামরিক উত্তেজনা চলছে।তবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্যাংগং লেকের ধারে মঙ্গলবার যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বহু বছরের মধ্যে তার কোনও নজির নেই।ওই বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় দুপক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রায়ই অন্যের এলাকায় ঢুকে পড়ার অভিযোগ এনে থাকে – তবে দুপক্ষের মধ্যে হিংসার ঘটনা একেবারেই বিরল।অপূর্ব সুন্দর প্যাংগং লেকের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা চীনের নিয়ন্ত্রণে আছে, আর বাদবাকি এক-তৃতীয়াংশ আছে ভারতের নিয়ন্ত্রণে। ভারতের দিক থেকে বহু পর্যটক ওই লেকটি দেখতেও যান।ভারতীয় সেনার ভাষ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার জনা পনেরো চীনা সেনার একটি দল লেকের ধার ঘেঁষে হাঁটতে হাঁটতে ভারতের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ঢুকে পড়ে।তখন ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যে সদস্যরা ওই সীমান্ত এলাকা পাহারা দেন তারা একটি চীনা ভাষায় লেখা প্ল্যাকার্ড তুলে ধরে তাদের বাধা দেন, যাতে লেখা ছিল ‘এই এলাকা আমাদের, অনুগ্রহ করে ফিরে যান’।মানববন্ধন তৈরি করেও ভারতীয় সেনারা তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বলা হচ্ছে চীনা ফৌজ তাতে ভ্রূক্ষেপ করেনি – ফলে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও পাথর ছোঁড়াছুঁড়ি শুরু হয়ে যায়।এই সংঘর্ষ স্থায়ী হয়েছিল প্রায় ঘন্টাদুয়েকের মতো। তবে দুই দেশের সেনাদের কেউই অস্ত্র ব্যবহার করেনি।তবে সরকারিভাবে ভারত বা চীন কেউই এই সংঘর্ষের ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেননি। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, “এটা এমন কোনও বিষয় নয় যা নিয়ে সরকারকে কথা বলতে হবে”।আর চীনা সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তারা প্যাংগং লেকের ধারে ওই সংঘর্ষের ঘটনা সম্পর্কে অবহিতই নন।তবে মঙ্গলবারের ওই ঘটনার পর উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে এদিন বুধবার লাদাখ অঞ্চলে মোতায়েন দুদেশের সেনাদের মধ্যে একটি ফ্ল্যাগ-মিটিং বা পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।ডোকলাম উপত্যকায় ভারত ও চীনের সেনারা গত দুমাসেরও বেশি সময় ধরে যে পরস্পরের মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে আছে, সেই সঙ্কটের ওপরও এই ঘটনা প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
