ঢাকা মহানগরী পূর্ব শাখা।
গতকাল শনিবার বিকেলে খুলনার কয়রা ও সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে এ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে অনুদান দেওয়ার সময় শিবিরের কেন্দ্রীয় মাদ্রাসা কার্যক্রম সম্পাদক হাফেজ ইমরান খালিদ বলেন, সমাজের প্রতি প্রত্যেকেরই একটা দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেই জায়গা থেকেই আমরা চেষ্টা করি সবসময় ক্ষতিগ্রস্ত ও অসহায় দরিদ্র মানুষের সেবা করতে। আমরা আশা করি, সমাজে যারা বিত্তবান রয়েছেন তারাও দুর্গতদের কল্যাণে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবেন। এ সময় সরকারের প্রতি ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি-ঘর, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংস্কার ও পুননির্মাণে বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করে দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান তিনি।
এসময় শিবিরের ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তাণ্ডবে বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অসংখ্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফসলি জমি, পুকুড় তলিয়ে গেছে। লাখো মানুষের বসতঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা এখন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। সহায়তার জন্য হাহাকার উঠলেও এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সহায়তার তেমন লক্ষণ দেখা যায়নি। তাই মানবিক দিক বিবেচনায় আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছি।
হাফিজুর রহমান বলেন, সহযোগিতার লক্ষ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে সরকার ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। সবাই মিলে এগিয়ে আসলে ক্ষতিগ্রস্তদের অসহায় অবস্থার দ্রুত অবসান ঘটতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি যার যার অবস্থান থেকে সবাই সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলে অল্প সময়ে ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের কষ্ট লাঘব করা সম্ভব। আমরা বিশ্বাস করি, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের দুর্যোগ কবলিত মানুষ ব্যথা-বেদনা, ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠে নব উদ্যমে আবার সবকিছু গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
আর্থিক সহায়তা প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় মাদ্রাসা কার্যক্রম সম্পাদক হাফেজ ইমরান খালিদ, কেন্দ্রীয় কলেজ কার্যক্রম সম্পাদক হাবিবুর রহমান, শিবিরের ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার সভাপতি হাফিজুর রহমান, খুলনা মহানগর সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, খুলনা জেলা সভাপতি সোলায়মান, ঢাকা মহানগর পূর্বের এইচআরডি সম্পাদক আরিফ হোসেন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ভয়াবহ বুলবুল দক্ষিণাঞ্চলের অন্তত ১০টি জেলায় তাণ্ডব চালিয়েছে। বিশেষ করে সাতক্ষীরা জেলায় রেখে গেছে গভীর ক্ষত। জেলার শ্যামনগর উপজেলায় ক্ষতির পরিমাণটা সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। প্রাথমিক হিসাবে গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী ও মুন্সিগঞ্জের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে ৫০-৬০ শতাংশ কাঁচাঘর ধসে পড়েছে। পুরো জেলায় প্রায় ৪৫ হাজার ঘর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও প্রায় ২০ হাজার ঘরবাড়ি। অন্যদিকে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমির উঠতি আমন ফসল সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়েছে। ১৭ হাজার ৫০০ হেক্টর ঘেরের মধ্যে ৫ হাজার হেক্টর ঘেরের প্রায় ৫০০ মেট্রিক টন মাছ ভেসে গেছে। একই সঙ্গে পুরো জেলায় পশুসম্পদেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।